২০টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া ২০২৪

5/5 - (2 votes)

বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া হলো হলো: ই-কমার্স, ড্রপশিপিং, ফ্রিল্যান্সিং, ডিজিটাল মার্কেটিং, অনলাইন কোর্স, ব্লগিং, এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ইত্যাদি। অনলাইন ব্যবসা শুরু করার অনেক সুবিধা রয়েছে। ইন্টারনেটের অগ্রগতির সাথে, ছোট থেকে বড় উদ্যোগ গড়ে তোলা এখন সহজ। 

বর্তমান সময়ে অসংখ্য মানুষ অনলাইন ব্যবসার দিকে ঝুঁকছে, কেননা এটা শুরু করা কিংবা পরিচালনা করা অনেকটা সহজ ফিজিক্যাল ব্যবসায়ের তুলনায়। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা জানে অনলাইন ব্যবসা সম্পর্কে তবে সঠিক আইডিয়া না পাওয়ার কারণে শুরু করতে পারছে না। বিশেষ করে তাদের জন্যই এই আর্টিকেলটি লিখা হয়েছে যাদের অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া প্রয়োজন। তাহলে চলুন শুরু করা যাক। 

Table of Contents

অনলাইন ব্যবসা কি

প্রথমেই অল্প কিছু কথায় জেনে নেয়া যাক অনলাইন ব্যবসা কি সে সম্পর্কে। অনলাইন ব্যবসা এমন একটি ব্যবসা যা সম্পূর্ণভাবে বা আংশিকভাবে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। ইন্টারনেটের সহজলভ্যতার কারণে মানুষ এখন ঘরে বসেই ব্যবসা শুরু করতে পারে। ফিজিক্যাল ব্যবসার তুলনায় অনলাইন ব্যবসা সময় ও অর্থ সাশ্রয় করে, যা ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য অত্যন্ত উপকারী।

অনলাইন ব্যবসা করার স্ট্রেটেজি গুলো কি কি

অনলাইন ব্যবসায় সফল হতে চাইলে প্রয়োজন সঠিক স্ট্রেটেজি। সঠিক পরিকল্পনা ও উপযুক্ত উপায় অবলম্বন করলে সহজেই সফলতা অর্জন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে প্রথমেই বাজার বিশ্লেষণ করতে হবে। প্রতিযোগীদের শক্তি ও দুর্বলতা সম্পর্কে জানতে হবে। 

এরপর পণ্যের বৈচিত্র্য এবং মান নির্ধারণ করতে হবে। পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া ডিজিটাল মার্কেটিং এবং ব্র্যান্ডিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক মার্কেটিং স্ট্রেটেজি আপনাকে সাফল্যের পথে নিয়ে যাবে।

অন্যদিকে গ্রাহক সেবা এবং ফিডব্যাক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রাহকদের সন্তুষ্ট করতে পারলে আপনার ব্যবসা দ্রুতই সফল হবে। তবে তার পাশাপাশি প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তার ব্যাপারটিও নিশ্চিত করতে হবে। তবে প্রতিটি ব্যবসাতেই যে একই জিনিস বারবার কার্যকর হবে তা কিন্তু নয়। ধরণের উপর নির্ভর করে সঠিক স্ট্রেটেজি অবলম্বন করলে অনলাইন ব্যবসায় সফলতা অর্জন করা সহজ হবে।

বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২০টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া  

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া খুঁজছেন? বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ২০টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আমরা হাজির হয়েছি। বর্তমান ইন্টারনেটের যুগে অনলাইন ব্যবসা শুরু করা এখন অনেক সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আপনার দক্ষতা ও আগ্রহ অনুযায়ী বিভিন্ন ব্যবসার মধ্যে থেকে পছন্দ করতে পারবেন। এক্ষেত্রে এই ব্লগ পোস্টে থাকছে জনপ্রিয় ও লাভজনক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া, দেখে নিন। 

১. সার্ভিস ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া 

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

এখন আপনি হয়তো অবাক হচ্ছেন সার্ভিস ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসা আবার কি? বর্তমানে এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে যারা অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের সেবা দিয়ে থাকে। নিম্নে ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:

ফ্রিল্যান্সিং

ফ্রিল্যান্সিং হলো এক ধরনের স্বাধীন কর্মসংস্থান। এখানে আপনি নিজের সময় ও দক্ষতা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সাররা সাধারণত গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, কন্টেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রিসহ হাজার ধরণের কাজ করে থাকে অনলাইনে। এই সকল কাজের চুক্তি প্রজেক্ট কিংবা ঘন্টা অনুযায়ী হয়ে থাকে।

পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের মানুষের কাজ থেকে কাজ নেয়া, কাজ করে পেমেন্ট পাওয়ার নির্ভরযোগ্য সুযোগ এখানে থাকছে। এটাকে তাই সার্ভিস ভিত্তিক একক ব্যবসার আওতায় আনা যায়। জনপ্রিয় কিছু ফ্রিল্যাংসিং প্ল্যাটফর্ম হলো: Upwork, Fiverr, Frelancer.com ইত্যাদি। 

SEO এক্সপার্ট এজেন্সি 

SEO (সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন) এক্সপার্ট এজেন্সি হলো একটি বিশেষ ধরণের সার্ভিস রিলেটেড ব্যবসা যেখানে আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের জন্য SEO সেবা প্রদান করেন। একটি ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং বাড়ানোর জন্য SEO খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাহলে প্রশ্ন থাকছে যে, কি কি কাজ করতে হয় এই সেক্টরে?

  • কীওয়ার্ড রিসার্চ: পণ্য বা সেবার জন্য উপযুক্ত কীওয়ার্ড নির্বাচন
  • অন-পেজ অপ্টিমাইজেশন: কন্টেন্ট ও মেটা ট্যাগ অপ্টিমাইজেশন
  • অফ-পেজ অপ্টিমাইজেশন: ব্যাকলিংক তৈরি ও মার্কেটিং সংক্রান্ত কাজ
  • টেকনিক্যাল SEO: ওয়েবসাইটের টেকনিক্যাল দিকগুলি ঠিক করা।

এটা করার ক্ষেত্রে একটি টিম তৈরি করে নেয়া ভালো যাতে করে SEO এর মধ্যে থাকা প্রতিটা সেপারেট কাজের জন্য সেপারেট লোকবল থাকে। এতে করে কাজের প্রোডাক্টিভিটি যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনই কাজে Expertise আসে। 

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট 

ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট (VA) হলো একজন পেশাদার যিনি দূর থেকে বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ করেন। একজন VA বিভিন্ন কাজে সাহায্য করতে পারেন যেমন:

  • ইমেল ম্যানেজমেন্ট: ইমেল চেক করা ও রিপ্লাই দেওয়া
  • সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট: পোস্ট তৈরি ও শিডিউল করা
  • ডাটা এন্ট্রি: ডাটা সংগ্রহ ও ম্যানেজমেন্ট
  • কাস্টমার সার্ভিস: কাস্টমারদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া

এটি মূলত নির্ভর করবে আপনি কোন কোম্পানির হয়ে কাজ করছেন কিংবা আপনাকে ঠিক কোন কাজের জন্য রাখা হয়েছে সেটির উপর। তবে এটাকে জব নয় বরং সার্ভিস বিজনেস হিসেবে দেখতে পারেন কেননা আপনি একাধিক স্থানে ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট হিসেবেও কাজ করতে পারবেন অনলাইনে। 

কন্টেন্ট রাইটার 

সার্ভিস রিলেটেড একক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়ার মধ্যে অন্যতম সেরা হলো কন্টেন্ট রাইটার যদি আপনি এই বিষয়ে দক্ষ হয়ে থাকেন তবে। মূলত কন্টেন্ট রাইটাররা বিভিন্ন ধরনের কন্টেন্ট লিখে থাকেন যেগুলো ওয়েবসাইট, ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেল মার্কেটিং ইত্যাদিতে ব্যবহার হয়। একজন কন্টেন্ট রাইটারের কাজ গুলো হলো:

  • ব্লগ পোস্ট: ইন্টারেস্টিং ও ইনফরমেটিভ পোস্ট লেখা
  • আর্টিকেল: ইনডেপথ আর্টিকেল তৈরি
  • প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন: প্রোডাক্টের বিবরণ লেখা
  • ইমেল কন্টেন্ট: ইমেল মার্কেটিংয়ের জন্য কন্টেন্ট তৈরি

কন্টেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে পেমেন্ট ৩ ভাবে হয়ে থাকে। মাসিক চুক্তিতে, ওয়ার্ড ভিত্তিক, এবং আর্টিকেল ভিত্তিক। তাই আপনার যদি লিখার দক্ষতা থাকে তবে এই সার্ভিস দিয়েও অনলাইনে ইনকাম করতে পারবেন।  

কপি রাইটার

কন্টেন্ট রাইটারের একক সেক্টর হলো Copy Writing. নামে কপি আছে বলেই এটা ধরে নিতে হবে না যে এখানে লিখা কপি করা হয়। মূলত কপি রাইটাররা এমন কন্টেন্ট তৈরি করেন যা পাঠকদের আকর্ষণ করে এবং বিক্রি বাড়ায়। কপি রাইটিং মূলত মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন সংক্রান্ত কাজ। এখানে রয়েছে:

  • অ্যাড কপি: বিজ্ঞাপন কন্টেন্ট তৈরি
  • ল্যান্ডিং পেজ কপি: ল্যান্ডিং পেজের জন্য আকর্ষণীয় কন্টেন্ট লেখা
  • ইমেল কপি: ইমেল ক্যাম্পেইনের জন্য কন্টেন্ট তৈরি
  • প্রোডাক্ট পেজ কপি: প্রোডাক্ট পেজের জন্য কন্টেন্ট লেখা

অনলাইন ভিত্তিক ব্যবসা বাড়ার পাশাপাশি কপি রাইটারের চাহিদাও বাড়ছে। 

ওয়েব ডিজাইনার এন্ড ডেভেলপার

ওয়েব ডিজাইনার এবং ডেভেলপাররা ওয়েবসাইট তৈরি ও মেইনটেনেন্স করেন। ওয়েব ডিজাইনিং এবং ডেভেলপমেন্ট একটি ক্রিয়েটিভ এবং টেকনিক্যাল কাজ। অনেক গুলো কোডিং ল্যাংগুয়েজের উপর দক্ষতা থাকতে হয় এতে। সাধারণত ওয়েব ডিজাইনারদের কাজ গুলো হলো:

  • UI/UX ডিজাইন: ইউজার ইন্টারফেস ও ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ডিজাইন
  • গ্রাফিক ডিজাইন: ওয়েবসাইটের ভিজ্যুয়াল এলিমেন্ট ডিজাইন

অন্যদিকে ওয়েব ডেভেলপারদের কাজ গুলো হলো:

  • ফ্রন্ট-এন্ড ডেভেলপমেন্ট: ওয়েবসাইটের ভিজ্যুয়াল এলিমেন্ট কোডিং
  • ব্যাক-এন্ড ডেভেলপমেন্ট: সার্ভার ও ডাটাবেস ম্যানেজমেন্ট
  • ফুল-স্ট্যাক ডেভেলপমেন্ট: ফ্রন্ট-এন্ড ও ব্যাক-এন্ড উভয় কাজ

অনলাইনে যত কিছুই আমরা দেখতে পাই সব কিছুই ওয়েবসাইটের উপর ভিত্তি করেই তাই বুজতে পারছেন এর চাহিদা কেমন হতে পারে। এটাও যথেষ্ট লাভজনক সার্ভিস রলেটেড ব্যবসা।

ভিডিও ইডিটিং সার্ভিস

সময়ের সাথে সাথে ভিডিও কন্টেন্ট কঞ্জিউম করার প্রবণতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ এখন যেকোনো বিষয় জানতে ভিত্তিও নির্ভর হয়ে ইউটিউবে চলে যাচ্ছে। আর যত বেশি ভিডিও কন্টেন্ট তত বেশি সুযোগ ভিডিও ইডিটিং সার্ভিস ব্যবসার। ভিডিও ইডিটিং সার্ভিস এখন খুবই জনপ্রিয়, এগুলোর মধ্যে থাকছে:

  • ইউটিউব ভিডিও ইডিটিং
  • সোশ্যাল মিডিয়া ভিডিও
  • প্রোমোশনাল ভিডিও
  • এনিমেশন ভিডিও

এটাকে একাধারে একক সার্ভিস কিংবা এজেন্সি তৈরি করে বৃহৎ আঁকারে সার্ভিস ব্যবসায় রুপান্তর করা যায়। 

২. প্রোডাক্ট ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া 

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

প্রোডাক্ট ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া গুলো অনেকেই অনুসরণ করছেন। এই ব্যবসায় আপনি বিভিন্ন প্রোডাক্ট অনলাইনে বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন। এখানে আমরা কিছু প্রোডাক্ট ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করবো যা আপনাকে সফল ব্যবসায়ী হতে সহায়তা করবে।

ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট বিজনেস 

ইম্পোর্ট এক্সপোর্ট বিজনেস একধরনের অনলাইন ব্যবসা যেখানে আপনি বিদেশ থেকে প্রোডাক্ট আমদানি করে দেশের বাজারে বিক্রি করতে পারেন অথবা দেশীয় প্রোডাক্ট বিদেশে রপ্তানি করতে পারেন। এই ব্যবসায় সফল হতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে:

  • বাজার গবেষণা করা
  • সঠিক প্রোডাক্ট নির্বাচন করা
  • বিশ্বস্ত সরবরাহকারী খুঁজে বের করা
  • আইন ও বিধি-বিধান মেনে চলা

আমদানি করা প্রোডাক্ট অনলাইন বিক্রির জন্য আলাদা স্ট্রেটেজি সেট করতে হবে আবার নিজ দেশের তৈরি পণ্য রপ্তানি করার জন্য আলাদা স্ট্রেটেজি অনুসরণ করতে হবে।

তবে এমন অনেক আমদানি মূলক ব্যবসা আছে যেগুলো করার ক্ষেত্রে অফলাইনে কোনো এক্টিভিটিসের প্রয়োজন হয় না। অনলাইনে অর্ডার করে পণ্য আনা, সেগুলোকে নিজ স্থানে মোড়কিকরণ করে অনলাইনে সেল করে ডেলিভারি পার্টনারের সাহায্যে ক্রেতার হাতে পৌছে দেয়ার মাধ্যমে ব্যবসা করা যায়। 

ড্রপশিপিং

ড্রপশিপিং হলো একধরনের অনলাইন ব্যবসা যেখানে আপনি প্রোডাক্ট স্টক না করেই গ্রাহকদের কাছে বিক্রি করতে পারবেন। এরপর আপনি সরবরাহকারীর কাছে গ্রাহকের তথ্য দিয়ে প্রোডাক্ট সরাসরি গ্রাহকের কাছে পাঠিয়ে দিতে পারবেন। ড্রপশিপিং ব্যবসায় সফল হতে হলে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হবে যেমন:

  • বিশ্বস্ত সরবরাহকারী খুঁজে বের করা
  • মার্কেটিং দক্ষতা উন্নত করা
  • গ্রাহক সেবা উন্নত করা

এই কাজ করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বর্তমানে ৩টি প্ল্যাটফর্ম ভালো কাজ করছে যেগুলো হলো: BD Shop, CheckBox, SELF ইত্যাদি। 

ফেসবুক মার্কেটপ্লেস

Facebook মার্কেটপ্লেস একটি জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম যেখানে আপনি প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। এখানে আপনি সহজেই প্রোডাক্ট পোস্ট করে স্থানীয় গ্রাহকদের কাছে সেগুলো বিক্রি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনি ৩টি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারবেন যেমন: ১) আপনি ক্রেতার ঘরে প্রোডাক্ট পৌছে দিবেন; ২) ক্রেতা আপনার কাছে এসে প্রোডাক্ট নিয়ে যাবে; ৩) মিউচুয়াল স্থানে মিট করে হাতে হাতে লেনদেন করবেন;

ফেসবুক মার্কেটপ্লেসে প্রোডাক্ট বিক্রি করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. ফেসবুকে লগ ইন করুন
  2. মার্কেটপ্লেসে যান
  3. নতুন লিস্টিং যোগ করুন
  4. প্রোডাক্টের ছবি, বিবরণ এবং মূল্য নির্ধারণ করুন
  5. লিস্টিং পোস্ট করুন, That’s all. 

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম 

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম (যেমন – অ্যামাজন, ইবে, দারাজ ইত্যাদি) আপনি অনলাইনে প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। এই প্ল্যাটফর্ম গুলোতে আপনার প্রোডাক্ট পোস্ট করে সহজেই গ্রাহকদের কাছে পৌঁছাতে পারেন। প্রোডাক্ট যদি আপনার নিজের হয় কিংবা সোর্সিং ভালো থাকে তবে খুব সহজ একটি পদ্ধতি এটি। 

ই-কমার্স প্ল্যাটফর্মে প্রোডাক্ট বিক্রি করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. প্ল্যাটফর্মে সেলার অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন
  2. প্রোডাক্টের ছবি ও বিবরণ আপলোড করুন
  3. প্রোডাক্টের মূল্য নির্ধারণ করুন
  4. প্রোডাক্ট লিস্টিং পোস্ট করুন

That’s all,  এবার যখনই অর্ডার আসবে আপনি উক্ত প্ল্যাটফর্মের ডেলিভেরি ম্যান দ্বারা প্রোডাক্ট পাঠিয়ে দিবেন। 

অনলাইন শপ 

আপনার নিজস্ব অনলাইন শপ তৈরি করে আপনি প্রোডাক্ট বিক্রি করতে পারেন। এই শপটি আপনার ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট হতে পারে অথবা শপিফাই, উইক্স ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে তৈরি হতে পারেন।

অনলাইন শপ তৈরি করতে নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন:

  1. একটি নির্দিষ্ট নিস বা পণ্য নির্বাচন করুন
  2. ওয়েবসাইট তৈরি করুন
  3. প্রোডাক্টের ছবি ও বিবরণ আপলোড করুন
  4. প্রোডাক্টের মূল্য নির্ধারণ করুন
  5. মার্কেটিং পরিকল্পনা তৈরি করুন

এরপর নিজের স্ট্রেটেজি অনুসারে পণ্য ভিত্তিক প্রচারণা ও বিক্রি করে ব্যবসা চালিয়ে যান। এটা সম্পূর্ণ অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া যেখানে আপনার ফিজিক্যাল কোনো দোকানের প্রয়োজন হবে না। 

৩. মার্কেটিং ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া 

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবসা শুরু করা এখন অনেক সহজ। এক্ষেত্রে মার্কেটিং ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া গুলো বিশেষভাবে কার্যকরী। এই ব্যবসা গুলোতে কম খরচে ভালো আয় করা যায়। নিচে কিছু জনপ্রিয় মার্কেটিং ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া নিয়ে আলোচনা করা হলো।

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং খুব জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে আজকাল। এখানে আপনি বিভিন্ন কোম্পানির পণ্য বা সেবা প্রচার করেন সেগুলোতে Sales, leads, visitors এনে দেয়ার মাধ্যমে কমিশন পাবেন। শুধু একটি ভালো নেটওয়ার্ক ও মার্কেটিং স্ট্রাটেজি দরকার এই কাজটি করতে হলে। এখানে কিছু জনপ্রিয় অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রামের তালিকা দেয়া হলো:

প্রোগ্রামের নাম
Amazon Associates Impact 
ClickBank CJ
ShareASale Appsumo

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর সুবিধাসমূহ:

  • কম খরচে শুরু করা যায়
  • বিভিন্ন পণ্য বা সেবা প্রচারের মাধ্যমেই আয় স্টকে রাখা লাগে না
  • ঘরে বসে কাজ করার সুবিধা
  • আজীবনের প্যাভিস ইনকাম

ইমেইল মার্কেটিং 

ইমেইলের মাধ্যমে পণ্য বা সেবা প্রচার করে উক্ত পণ্য বা সেবার Sales, leads, visitors এনে দেয়ার প্রসেসকেই ইমেইল মার্কেটিং বলে। এটি কাস্টমারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগের একটি মাধ্যম। ইমেইল মার্কেটিং শুরু করতে একটি ইমেইল লিস্ট দরকার। একক ব্যবসা হিসেবে এটা অত্যাধিক কার্যকর। 

ইমেইল মার্কেটিং-এর সুবিধাসমূহ:

  • কম খরচে প্রচার করা যায়
  • প্রত্যক্ষ যোগাযোগের সুবিধা
  • লক্ষ্য নির্ধারণ করে প্রচার সম্ভব
  • নিদ্দিষ্ট একটা প্রোডাক্ট নির্ভর হতে হয় না 
  • যেকোনো সেক্টরের জন্যই উপযোগী

কিছু জনপ্রিয় ইমেইল মার্কেটিং প্ল্যাটফর্ম:

প্ল্যাটফর্মের নাম

বৈশিষ্ট্য

Mailchimp সহজ ব্যবহার, অটোমেশন
ConvertKit ব্লগারদের জন্য উপযোগী
GetResponse ওয়েবিনার ফিচার

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং

সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং বর্তমান সময়ের একটি প্রভাবশালী অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া। এই পদ্ধতিতে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, টুইটার, লিংকডিন, কোরা, পিন্টারেস্ট ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে পণ্য বা সেবা প্রচার করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং-এর মাধ্যমে সহজেই বড় সংখ্যক গ্রাহকের কাছে পৌঁছানো যায়। 

এক্ষেত্রে বিভিন্ন কোম্পানি ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সাথে যোগাযোগ করে তাদের প্রোডাক্টের প্রোমোশন (যেমন Organic Marketing, Paid Marketing, Ads Run ইত্যাদি) মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের কাঙ্খিত চাহিদা পূরণ করার মাধ্যমে আয় করা। এটাকে অনেকটা B2B ব্যবসাও বলা যায়। আইটি ফার্ম কিংবা এজেন্সি তৈরি করেও এই ব্যবসাটি পরিচালন করা হয়ে থাকে। 

৪. স্কিল ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া  

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া

বর্তমানে Skill ভিত্তিক ব্যবসা শুরু করা সহজ এবং লাভজনক। যদি আপনার সৃজনশীলতা ও দক্ষতা থাকে, তাহলে আপনি অনলাইন ব্যবসার মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করতে পারেন। চলুন জেনে নেয়া যাক কিছু স্কিল ভিত্তিক ব্যবসা সম্পর্কে।

ব্লগিং 

ব্লগিং একটি জনপ্রিয় স্কিল ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া। আপনি যদি লিখতে পছন্দ করেন এবং আপনার কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে জ্ঞান থাকে, তাহলে ব্লগিং হতে পারে আপনার জন্য সেরা ব্যবসা। ব্লগিংয়ের মাধ্যমে আপনি বিভিন্নভাবে আয় করতে পারেন।

  • অ্যাডসেন্স বিজ্ঞাপন: আপনার ব্লগে বিজ্ঞাপন প্রদর্শন করে আয় করতে পারেন।
  • স্পন্সরড পোস্ট: বড় কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের জন্য স্পন্সরড পোস্ট লিখে আয় করতে পারেন।
  • অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং: প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রোমোট করে কমিশন আয় করতে পারেন।

একটি সফল ব্লগ শুরু করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:

  1. নিশ নির্ধারণ: আপনার ব্লগের বিষয় / নিশ বেছে নিন। এটি হতে পারে ফ্যাশন, ফুড, ট্রাভেল ইত্যাদি।
  2. ডোমেইন ও হোস্টিং: একটি প্রফেশনাল ডোমেইন ও ভাল মানের হোস্টিং কিনুন।
  3. কনটেন্ট তৈরি: নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট তৈরি করুন।
  4. SEO: সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন করে ট্রাফিক বাড়ান।

ইউটিউবিং 

ইউটিউবিংও একটি চমৎকার স্কিল ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া। আপনি যদি ভিডিও তৈরি করতে পছন্দ করেন এবং কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা থাকে, তাহলে ইউটিউব হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ। YouTubing এর মাধ্যমে যে সেক্টর থেকে ইনকাম করা যায় সেগুলো হলো: 

  • মনিটাইজেশন: আপনার ভিডিওতে বিজ্ঞাপন যোগ করে আয় করতে পারেন।
  • স্পন্সরশিপ: বিভিন্ন কোম্পানি থেকে স্পন্সরশিপ পেতে পারেন।
  • মেম্বারশিপ: পেইড মেম্বারশিপ অফার করতে পারেন।

ইউটিউব চ্যানেল শুরু করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ:

  1. চ্যানেলের নিশ: আপনার চ্যানেলের নিশ নির্ধারণ করুন। এটি হতে পারে টেক, ফুড, ট্রাভেল ইত্যাদি।
  2. ভিডিও কনটেন্ট: নিয়মিত মানসম্মত ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করুন।
  3. SEO: ভিডিও টাইটেল, ডেসক্রিপশন এবং ট্যাগে SEO করুন।
  4. প্রমোশন: সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যানেল প্রমোট করুন।

অনলাইন টিউটর

আপনি যদি কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে দক্ষতা রাখেন এবং শেখাতে পছন্দ করেন, তাহলে অনলাইন টিউটরিং হতে পারে আপনার জন্য একটি লাভজনক ব্যবসা। করোনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা অনলাইনে পড়াশোনার দিকে বেশি ঝুঁকেছে। ১০ মিনিট স্কুলের মত বর্তমানে এমন গুলো অনলাইন টিউটরিং প্ল্যাটফর্ম দেখা যাচ্ছে। 

তাহলে আপনি কেনো নিজেকে পিছিয়ে রাখবেন? স্কাইপ, জুম বা গুগল মিটের মত প্লাটফর্ম ব্যবহার করুন আর ব্যাচ আকারে শুরু করে দিন অনলাইন টিউটরিং। এক্ষেত্রে প্রয়োজন জনপ্রিয়তা ও মার্কেটিং যার জন্য রয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম গুলো। তবে আপনি কি পড়াবেন, কিভাবে পড়াবেন এইসব বিষয়ে যথাযথভাবে শিক্ষার্থীদের বুজতে দিতে হবে। 

অনলাইন কোর্স 

অনলাইন কোর্স তৈরি ও বিক্রি করাও একটি লাভজনক স্কিল ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া। আপনি যদি কোনও নির্দিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হন এবং তা অন্যদের শেখাতে চান, তাহলে অনলাইন কোর্স হতে পারে আপনার জন্য আদর্শ ব্যবসা। এটা যেকোনো Non-Academic বিষয়ের উপরেই হতে পারে। 

কোর্স প্লাটফর্ম হিসেবে সিলেক্ট করতে পারে Udemy, Coursera, Teachable ইত্যাদির মত প্লাটফর্ম গুলোকে, যেখানে আপনি কোর্স ভিডিও আপলোড করবেন। কোর্স এর মান ও ভিডিও কোয়ালিটি ঠিক রেখে প্রচুর মার্কেটিং করুন, কোর্স সেল করে ইনকাম করার ব্যাপারটা এক্ষেত্রে দারুন ভাবে কাজে দিবে। 

ওয়েবসাইট ফ্লিপিং 

ওয়েবসাইট ফ্লিপিং একটি আকর্ষণীয় স্কিল ভিত্তিক অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া। আপনি যদি ওয়েবসাইট তৈরি, গ্রো করা এবং বিক্রিতে দক্ষ হন, তাহলে ওয়েবসাইট ফ্লিপিং হতে পারে একটি লাভজনক ব্যবসা।

বিষয়টি কিভাবে ঘটবে? প্রথমেই আপনি একটি ওয়েবসাইট তৈরি কিংবা দুর্বল ওয়েবসাইট ক্রয় করবেন। এরপর নিজের SEO দক্ষতা ও টেকনিক্যাল বিষয় গুলো সামলে নিয়ে সেই ওয়েবসাইটকে Grow করবেন। এরপর সেখানে Monitization চালু করার মাধ্যমে ভ্যালু ক্রিয়েট করবেন। অতঃপর সেটিকে অনেক উচ্চ মূল্যে বিক্রি করবেন। 

📌 আরো পড়ুন 👇

Flippa বা Empire Flippers এর মত প্লাটফর্মে গুলোর মাধ্যমে ওয়েবসাইট বিক্রি করে খুব ভালো দাম পেতে পারেন। তাছাড়া সোশ্যাল মিডিয়া ও ফোরামে কমিউনিটির সাথে কানেক্ট থেকেও ওয়েবসাইট বাই সেল করতে পারবেন। 

উপরে আলোচিত অনলাইনে ব্যবসার যে আইডিয়া কি আপনার ভালো লাগে, সেই আইডিয়া নিয়ে কাজ শুরু করুন। ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য আমাদের আর্টিকেল লেখা আছে আপনি চাইলে সেটি পড়তে পারেন। 

আরো পড়ুন: অনলাইন ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায়

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কিত প্রশ্ন ও উত্তর

কিভাবে ছোট ব্যবসা শুরু করা যায়?

ছোট ব্যবসা শুরু করতে ব্যবসার নিশ নির্ধারণ করুন। বাজার গবেষণা করুন। ব্যবসার পরিকল্পনা তৈরি করুন। অর্থায়নের ব্যবস্থা করুন। ব্যবসা রেজিস্ট্রেশন করুন। লাইসেন্স নিন। পণ্য বা সেবা তৈরি করুন। গ্রাহকদের কাছে পৌঁছান। সোশ্যাল মিডিয়া এবং অনলাইন মার্কেটিং করে প্রোডাক্ট বিক্রি করুন। ডেলিভেরি পার্টনারের সাথে যুক্ত হয়ে ক্রেতার নিকট পণ্য পৌছে দিন। 

ফেসবুকে কিভাবে ব্যবসা করা যায়?

ফেসবুকে ব্যবসা করতে ফেসবুক পেজ খুলুন। পণ্য বা সেবার ছবি ও বিবরণ পোস্ট করুন। নিয়মিত আপডেট দিন। বিজ্ঞাপন দিন। গ্রাহকদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে পণ্য বিক্রি করুন। 

কোন অনলাইন ব্যবসায় এখন সবচেয়ে লাভজনক?

বর্তমানে ই-কমার্স, ড্রপশিপিং এবং ডিজিটাল পণ্য বিক্রয় সবচেয়ে লাভজনক অনলাইন ব্যবসা। এই ব্যবসা গুলোতে কম বিনিয়োগের পাশাপাশি উচ্চ লাভের সম্ভাবনা রয়েছে।

অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে আমাদের মতামত

অনেকের ধারণা অনলাইনে ব্যবসা করা দীর্ঘকালীন কোনো সম্ভাবনা বয়ে আনে না। বিষয়টি মোটেও সত্যি নয়। অনলাইন ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে যদি সঠিক পণ্য বা সেবা পরিকল্পনার দ্বারা পরিচালনা করা যায় তবে নিঃসন্দেহে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে। 

এবারের আর্টিকেলে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে মোট ২০ টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে জানিয়েছি। আশা করছি উল্লেখ্যিত অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া গুলো আপনার পরিকল্পনায় সহায়ক হয়েছে। আপনার অনলাইন ব্যবসার জার্নির জন্য শুভকামণা।

আর্টিকেল টি পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।

Sharing Is Caring

Leave a Comment