ব্লুটুথ কি – আমরা অনেকেই ব্লুটুথ এর সাথে শব্দটির সাথে পরিচিত। অনেকেই হয়ত দৈনন্দিন জীবনে ব্লুটুথ এর সেবা ব্যবহার করে থাকি।
প্রযুক্তির উন্নয়ন এর সাথে ওতপ্রোতভাবে ভাবে জড়িয়ে আছে এই ব্লুটুথ সিস্টেম। তার ছাড়াই ডিভাইস কানেক্ট করার ক্ষেত্রে ব্লুটুথ প্রযুক্তি আবিস্কার করা হয়।
বর্তমানে আপনি খেয়াল করলে দেখবেন চার্জার, ইয়ারফোন, ক্যাবল, মাউস ইত্যাদি সব কিছুই ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে তার বিহীন সেবা দিচ্ছে।
কিন্তু কথা হচ্ছে ব্লুটুথ কিভাবে আবিস্কার হলো আর ব্লুটুথ কিভাবেই বা কাজ করে? এই সব প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য আপনাকে পুরো আর্টিকেল টি পড়তে হবে।
ব্লুটুথ আবিস্কার করেন কে

১৯৯৪ সালে এরিকসন নামের এক ব্যাক্তি সর্বপ্রথম ব্লুটুথ আবিস্কার করেন। ব্লুটুথ নাম টি রাখা হয় একজন ড্যানিস কিং এর নাম এর উপর ভিত্তি করে। যে কিনা ডেনমার্ক ও নরওয়ে কে একত্র করেছিল। আর এই ব্লুটুথ নাম টি দিয়ে এই প্রযুক্তির নাম রাখা হয়।
১৯৯৪ সালে আবিস্কার এর পর তখনকার সময়ের বিখ্যাত মোবাইল ফোন কোম্পানি গুলো সর্বপ্রথম তাদের ডিভাইসে ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার শুরু করে। যেমন – আইবিএম, নোকিয়া, ইনটেল, টসিবা যারা কিনা ব্লুটুথ প্রযুক্তির মার্কেটিং করে দেয়।
ব্লুটুথ প্রযুক্তি কিভাবে কাজ করে

ব্লুটুথ দিয়ে অল্প কিছু স্থানে কভারেজ পাওয়া যায়। বেশি দূরত্ব থেকে ব্লুটুথ এর ফ্রিকোয়েন্সী পাওয়া সম্ভব নয়। তবে চলুন জেনে নেই ব্লুটুথ কিভাবে কাজ করে –
ফ্রিকোয়েন্সি
ব্লুটুথ প্রযুক্তি 2.4 GHz ( ইন্ডাস্ট্রিয়াল সাইন্টিফিক মেডিক্যাল) ফ্রিকোয়েন্সি দিতে পারে। যেটা লাইসেন্স ছাড়াই ব্যবহার করা সম্ভব।
কাভারেজ
ব্লুটুথ দিয়ে অল্প কিছু স্থানে কভারেজ দেয়া সম্ভব। সর্বোচ্চ ১০০ মিটার পর্যন্ত কভারেজ দিতে পারে তবে যদি খোলা যায়গা হয়। যদি কোনো গাছ বা দেয়াল থাকে তবে সিগন্যাল ব্রেক করে ৩০ মিটার সর্বোচ্চ কভার করতে পারে।
ট্রান্সফার রেট
ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার করে সর্বোচ্চ ৩ মেগাবিট পার সেকেন্ড পাওয়া সম্ভব। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অল্প গতির ডাটা ট্রান্সফার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়।
ডিভাইস কানেকসন
ব্লুটুথ ব্যবহার করার জন্য সবার প্রথমে আপনাকে ডিভাইসের সাথে ব্লুটুথ কানেক্ট করতে হবে। এখানে কিছু সিকিউরিটি কার্ডিন্যালস ও আছে যেটা ব্লুটুথ সাপোর্টেড ডিভাইসে ডিফল্ট ভাবে দেয়া থাকবে।
ব্লুটুথ কত প্রকার
ব্লুটুথ আবিস্কার হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত অনেক গুলো ভার্সন রিলিজ করা হয়েছে যার মধ্যে অন্যতম হলো –
১. ব্লুটুথ ক্লাসিক
এটাকে BR বা ব্যাসিক রেট ও বলা হয়। সাধারণ কাজের জন্য এই ধরণের ব্লুটুথ প্রযুক্তি ব্যবহার হয়। বিশেষ করে – অডিও ট্রান্সফার, ভয়েস কল ইত্যাদি।
২. ব্লুটুথ লো এনার্জি
এটা দিয়েও সাধারণ কাজ করা যায় যেমন – ফিটনেস ট্রাকার, স্মার্ট ঘড়ি ও সেন্সর।
৩. ব্লুটুথ ৫.০
সর্বশেষ একটি ভার্সন হলো ব্লুটুথ ৫.০। এটা দিয়ে সব ধরণের কাজ করা যায়। ডাটা ট্রান্সফার এর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২ এমবি পিএস পর্যন্ত গতি পাওয়া যায়। পাশাপাশি কভারেজ এর পরিমান ও বৃদ্ধি করা হয়েছে।
ব্লুটুথ কি কাজে ব্যবহার করা হয়
ব্লুটুথ আসলে স্মার্ট ডিভাইস এর ক্ষেত্রে অনেক বেশি প্রয়োজনীয়। যেসব ক্ষেত্রে ব্লুটুথ সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় সেগুলো হলো –
অডিও
তার ছাড়াই ইয়ারফোন, স্পিকার ইত্যাদি তে ব্লুটুথ দিয়ে অডিও ট্রান্সফার করা হয়।
স্বাস্থ্য পরিক্ষা
বিভিন্ন ধরণের স্মার্ট ডিভাইস এর ক্ষেত্রে হার্ট রেট, হাটার ট্রাকিং এর ক্ষেত্রে ব্লুটুথ সেন্সর ব্যবহার করা হয়।
স্মার্ট হোম
বাড়িতে ফ্যান লাইট ইত্যাদি সব কিছু সুইচ ছাড়া রিমোট এর মাধ্যমে কন্ট্রোল করার জন্য ব্লুটুথ সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।
আউটপুট ডিভাইস
আউটপুট ডিভাইস কানেক্ট করা যায় কোনো তার ছাড়াই। যেমন – মাউস, কিবোর্ড ইত্যাদি।
ব্লুটুথ এর সুবিধা
ব্লুটুথ এর অনেক সুবিধা আছে। যা আমরা দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সকলে ব্যবহার করে থাকি। তবে সবচেয়ে সুবিধার দিক হলো –
- ব্লুটুথ কোনো প্রকার তার ছাড়াই যে কোনো ডিভাইস কে কানেক্ট করার সুবিধা দিয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে আমাদের তার এর ঝামেলা পোহাতে হয় না।
- ব্লুটুথ সিস্টেম অনেক কম পাওয়ার খরচ করে। তাই ব্যাটারি দিয়ে অনেক সময় পর্যন্ত এটা ব্যবহার করা যায়।
- খুব সহজ ভাবে একটা ডিভাইস থেকে অন্য একটা ডিভাইস কানেক্ট করা যায়।
📌 আরো পড়ুন 👇
ব্লুটুথ সম্পর্কে আমাদের মতামত
ব্লুটুথ কি আর্টিকেলে আমরা ব্লুটুথ সম্পর্কে বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করলাম। যদি আপনি ব্লুটুথ সম্পর্কে জেনে উপকৃত হন তাহলে আর্টিকেল টি শেয়ার করে দিতে পারেন। এমন আরো গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেল পড়তে আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করুন।