প্রতিষ্ঠানের আয় সৃষ্টির মূল উপাদান হলো সেলস। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান সেলস হল অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। আমাদের দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান যে কৌশল অবলম্বন করে সেলস বৃদ্ধি করে সে কৌশল সাধারণত বহুজাতিক কোম্পানি এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো অনুসরণ করে না। তবে যে ধরনের কোম্পানি হোক না কেন প্রত্যেকটি কোম্পানি তাদের পণ্য এবং সেবার বিনিময়ে সেলস বৃদ্ধি করে থাকে।
প্রত্যেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বাজারে টিকে থাকার জন্য এবং গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য সেলস কৌশল এবং পরিকল্পনা গ্রহণ করে থাকেন। প্রত্যেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের নিজেদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ প্রতিযোগিতা থাকে, বাজারে নিজেদের অবস্থান শক্ত করার জন্য এবং প্রতিযোগীদের থেকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য প্রত্যেকটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সেলস কৌশল ভিন্ন হয়ে থাকে। আজকের আর্টিকেলে আমরা সেলস কি? সেলস কত প্রকার ও কি কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সেলস কাকে বলে
সহজ কথায় সেলস শব্দের অর্থ হলো পণ্য এবং সেবা বিক্রি করা। এবং সেলস পরিকল্পনা হলো এমন একটি পরিকল্পনা যেখানে উৎপাদনকারী কিছু কৌশল অবলম্বন করে তাদের উৎপাদনকৃত পণ্য এবং সেবা নির্দিষ্ট পরিমাণ আয় এবং লভ্যাংশের বিনিময়ে বিক্রয় করে থাকে। বাংলাদেশ স্বনির্ভর হওয়ার পাশাপাশি নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস থেকে শুরু করে তথ্যপ্রযুক্তির হাতে ব্যবহৃত হয় এমন প্রত্যেকটি জিনিস নিজেরাই তাদের সম্প্রসারিত ব্যবসার মাধ্যমে উৎপাদন করছে।
কোম্পানিগুলো নিজস্ব পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে পণ্য এবং সেবায় বিক্রি করার সাথে সাথে বাজার সম্প্রসারিত করছে। এতে করে নতুন গ্রাহকরা তাদের কোম্পানির প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করছে। সাধারণত ব্যবসায়ের ধরন, পূর্ণ বা সেবার প্রকৃতি এবং লক্ষ্যবস্তুর ওপর নির্ধারণ করে সেলসের ধরন নির্ধারিত হয়।
আবার শহরের উচ্চবিত্ত শ্রেণীর কাছে কোম্পানি সেলসের জন্য যে পরিকল্পনা গ্রহণ করে গ্রামের নিম্নবিত্তদের কাছে সেই একই পরিকল্পনা কাজ করে না। তাই গ্রাম এবং শহরের ক্ষেত্রে সেলসের লক্ষ্যমাত্রা ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আবার কৃষি যন্ত্রপাতি বিক্রির জন্য সেলস পরিকল্পনা যেমন হয়ে থাকে প্রযুক্তিভিত্তিক জিনিসপত্র বিক্রির জন্য সেলস পরিকল্পনা সে ধরনের হয় না।
সেলস কত প্রকার ও কি কি
সেলসের ধরন সাধারণত নির্ভর করে বাজার পরিস্থিতির উপর। প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কৌশল এবং গ্রাহক সমর্থন এর ওপর ভিত্তি করে সেলস প্রধানত তিন ধরনের হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের পেছনে এই তিন ধরনের সেলস খুব গুরুত্বপূর্ণ মুখ্য ভূমিকা পালন করে। প্রতিষ্ঠানের সাফল্যের পেছনে কাজ করে এমন তিনটি সেলস হল:
- পুল (Pull) সেলস
- পুশ (Push) সেলস
- ডিরেক্ট (Direct) সেলস।
নিচে এই তিন ধরনের সেলস সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
পুল (Pull) সেলস
যে পরিস্থিতিতে গ্রাহক নিজেই উৎপাদনকারীর কাছে এসে পণ্য বা সেবা ক্রয় করতে চান তখন তাকে পুল সেলস বলে। গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী পণ্য বাজারজাতকরণের জন্য পুল সেলস অন্যতম একটি ভালো কৌশল। পুল সেলস এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল ই-কমার্স এর বিভিন্ন সাইট।
এখানে গ্রাহকরা নিজেরা প্রবেশ করে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পণ্য খুঁজে নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে ক্রয় করে থাকে। তবে এখানে পণ্য এবং সেবা সম্পর্কে উৎপাদনকারীরা গ্রাহকের কাছে আগে থেকেই সচেতনতা তৈরি করে রাখেন। কিন্তু এক্ষেত্রে গ্রাহকের দ্বারস্থ হয়ে তাকে কোনরকম চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে উৎপাদনকারীরা পণ্য বিক্রি করে না। বর্তমানে বাংলাদেশের অধিকাংশ ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি পুল সেলস এর উপর নির্ভরশীল।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম উন্নত হওয়ার পর থেকে পুল সেলস কৌশল অবলম্বন করে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। একটা সুন্দর বিজ্ঞাপন দেখার মাধ্যমে ক্রেতাদের সেই পণ্য কেনার আগ্রহ মনে মনে তৈরি হয় এবং তারা নিজেরাই পন্য চয়েজ করে নির্দিষ্ট কিছু টাকার বিনিময়ে ওই পণ্য ক্রয় করে থাকে।
পুল সেলস কেন গুরুত্বপূর্ণ
গ্রাহকের চাহিদা বুঝে পণ্য উৎপাদন করার জন্য পুল সেলস গুরুত্বপূর্ণ। এখানে গ্রাহক কেন্দ্রীকতার ভিত্তিতে পণ্য উৎপাদন করা হয়ে থাকে। আবার ব্রান্ড লয়ালিটি এর জন্য পুল সেলস গুরুত্বপূর্ণ। এতে করে গ্রাহকরা ব্র্যান্ডের প্রতি আস্থা রাখে এবং ওই একই ব্র্যান্ডের কাছ থেকে বারবার পণ্য ক্রয় করার মানসিকতা পোষণ করেন।
অন্যান্য সেলসের তুলনায় পুল সেলস এর তুলনামূলক বিজ্ঞাপন খরচ কম হয়। গ্রাহক যখন পুল সেলস এর মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠানের উপর আস্থা পোষণ করেন তখন ওই ব্রান্ডের কাছ থেকে বারবার পণ্য ক্রয় করেন এতে করে ব্রান্ডের মুনাফার পরিমান বৃদ্ধি পায়। পুল সেলসের বিভিন্ন কৌশল রয়েছে। সেগুলো হলো:
- কাস্টমার সার্ভিস,
- কনটেন্ট মার্কেটিং,
- ডিজিটাল মার্কেটিং,
- ব্র্যান্ডিং,
- ভালো মানের পণ্য উৎপাদন।
পুশ (Push) সেলস
এ ধরনের সেলস ব্যবস্থাপনায় উৎপাদনকারীরা সরাসরি গ্রাহকের কাছে গিয়ে পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য প্রচারণা চালায়। এখানে গ্রাহকদের সাথে উৎপাদনকারীরা সরাসরি যোগাযোগ করে এবং বিভিন্ন নোটিফিকেশন, মেসেজ, বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আক্রমণাত্মক বিক্রয় পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং ক্রেতাদেরকে পণ্য ক্রয় করতে উদ্বুদ্ধ করেন।
বাংলাদেশে এমন কিছু সেক্টর রয়েছে যেখানে উৎপাদনের পর পরই খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে পণ্য বা সেবা বিক্রয় করার প্রয়োজন হয়ে ওঠে।এক্ষেত্রে বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন টেলিকমিউনিকেশন, ইন্স্যুরেন্স, এবং বিভিন্ন সরাসরি বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্য বা সেবা বিক্রির জন্য পুল সেলস পদ্ধতি অবলম্বন করেন।
এই ধরনের সেলস এ যে টিম কাজ করে তারা সশরীরে অথবা প্রযুক্তির মাধ্যমে গ্রাহকের কাছে পৌঁছায় এবং তাদের কাছে পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য খুলে বলার মাধ্যমে তাদেরকে পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী করে তোলে। এক্ষেত্রে টেলি কমিউনিকেশন কোম্পানিগুলো তাদের নতুন সিম বিক্রয়, ইন্টারনেট সেবা বিক্রয়, মিনিট বিক্রয় এর জন্য পুশ (Push) সেলস পদ্ধতি অবলম্বন করে থাকে।
পুশ সেলস এর মাধ্যমে টেলি মার্কেটিং পদ্ধতি ব্যবহার করে গ্রাহকদের সরাসরি ফোন কল এর মাধ্যমে পণ্য সম্পর্কে আগ্রহী করে তোলা হয়। পুশ সেলস এর মাধ্যমে ডোর টু ডোর অর্থাৎ গ্রাহকের বাড়িতে গিয়ে পণ্য বিক্রয় করা হয়।
এক্ষেত্রে ইমেইলের মাধ্যমে পণ্য সম্পর্কে একটি বিস্তারিত বিবরণ গ্রাহকদের সামনে তুলে ধরা হয়। তাছাড়া পুশ সেলস এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ হল সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং। এখানে উৎপাদনকারীরা সহজেই পন্য বা সেবার বিজ্ঞাপন তুলে ধরে গ্রাহকদের পণ্য ক্রয় করতে আগ্রহী করে তোলে। এছাড়া ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পপ-আপ বিজ্ঞাপন প্রকাশ করা পুশ সেলস এর আরো একটি উদাহরণ।
পুশ সেলস এর সুবিধা
পুশ সেলস এর সুবিধা এবং অসুবিধা দুটোই রয়েছে। নিচে এর কিছু সুবিধা তুলে ধরা হলো:
- উৎপাদনকৃত পণ্য দ্রুত বিক্রয় করা সম্ভব,
- সরাসরি এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রাহকের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব,
- পুশ সেলস এর মাধ্যমে পুরনো ক্রেতা ধরে রাখার পাশাপাশি নতুন ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা সম্ভব।
পুশ সেলস এর কিছু অসুবিধা
সুবিধার পাশাপাশি পুশ সেলস এর আরো কিছু অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো হলো:
- খুব দ্রুত ব্র্যান্ড ইমেজ নষ্ট করতে পারে,
- গ্রাহকদের উপর অকারনে চাপ সৃষ্টি করা হয়,
- গ্রাহকদের জন্য অনেক সময় এটা বিরক্তির কারণ হয়ে ওঠে।
ডিরেক্ট (Direct) সেলস
ডিরেক্ট সেলস এর মাধ্যমে কোনরকম মধ্যস্থ কারীর সাহায্য ছাড়াই সরাসরি উৎপাদন কারী বা বিক্রেতার কাছ থেকে ক্রেতার কাছে পণ্য হস্তান্তর করা সম্ভব। এখানে উৎপাদনকারীরা সরাসরি গ্রাহকের বাড়িতে উপস্থিত হয়ে বা বড় বড় অফিসগুলোতে উপস্থিত হয়ে তাদের পণ্য সম্পর্কে একটি বিস্তারিত ধারণা প্রদান করে আসেন।
পরবর্তীতে যখন বিক্রেতার প্রয়োজন হয় তখন সে তোমার মত ক্রেতাকে ডেকে নেন এবং তার কাছ থেকে পণ্য ক্রয় করেন। বাংলাদেশের গ্রামীন পর্যায়ে এবং ছোটো শহরগুলোতে ডিরেক্ট সেলস এর প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো কখনো ডিরেক্ট সেলস এর আওতায় আসে না।
সাধারণত ছোট, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী ডিরেক্ট সেলস পদ্ধতিতে তাদের পণ্য এবং সেবা বিক্রি করে থাকেন। যেমন: গ্রামের কৃষকের কাছে যদি কোন পণ্য বিক্রির প্রয়োজন হয় তাহলে পুল সেলস, পুশ সেলস কোনটাই কাজে আসে না। এক্ষেত্রে একমাত্র কৃষকের কাছে উপস্থিত হতে হয় এবং তাকে ওই কৃষি পণ্য সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে হয়।
এজন্য গ্রামীন পর্যায়ে পণ্য বিক্রির জন্য ডিরেক্ট সেলস এর কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশের আরো কয়েকটি ছোট প্রতিষ্ঠান পণ্য বা সেবা বিক্রয়ের জন্য ডিরেক্ট সেলস পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকেন। যেমন:
- ঘর থেকে তৈরি করা খাবার বিক্রি,
- হস্তশিল্পের মাধ্যমে তৈরি করা পণ্য বিক্রি,
- গ্রাহককে বাসায় বসে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে।
ডিরেক্ট সেলস এর কিছু সুবিধা হলো:
- গ্রাহকের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষিত হয়,
- উৎপাদনকারীর উচ্চ মুনাফা লাভ হয়,
- নিজের মতো করে নতুন বাজার সম্প্রসারণ করার সুযোগ থাকে,
- গ্রাহকের পূর্ণ সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া সরাসরি অবলোকন করা যায়,
- নিজের সময় অনুযায়ী কাজ করা যায়,
- অতিরিক্ত আয় এবং ব্যবসা বড় করার সুযোগ থাকে।
ডিরেক্ট সেলস এর কিছু অসুবিধা
সুবিধার পাশাপাশি ডিরেক্ট সেলস এর কিছু অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো হলো:
- অন্যান্য সেলস এর তুলনায় এখানে পরিশ্রম বেশি হয়,
- গ্রাহকরা পণ্য কিনতে রাজি না হলে উৎপাদনকারীর হীনমন্যতায় ভোগার সুযোগ রয়েছে,
- ব্যক্তিগত জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করে।
ডিরেক্ট সেলস এর বিভিন্ন সুবিধা অসুবিধা থাকলেও যেকোনো ছোট এবং মাঝারি আকৃতির কোম্পানি এবং যারা নতুন ব্যবসায় শুরু করেছেন তাদের জন্য এটাই সবথেকে ভালো পন্থা। আপনি ডিরেক্ট সেলস এর মাধ্যমে সরাসরি গ্রাহকের ভালোবাসা অর্জন করতে পারবেন এবং তাদের আস্থা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন করলে খুব দ্রুত ব্যবসা বড় করার সুযোগ আসবে।
কিভাবে সেলস কাজ করে
নিম্নলিখিতভাবে সেলস সরাসরি উৎপাদনকারীদের থেকে গ্রাহক পর্যায়ে কাজ করে থাকে। যেসব পদ্ধতি অনুসরণ করে সেলস কাজ করে থাকে তা হল:
- গ্রাহকের সাথে পরিচিত হওয়ার মাধ্যমে,
- প্রতিযোগী কোম্পানিগুলো যাবতীয় তথ্য সংরক্ষণ করার মাধ্যমে,
- নিজস্ব পণ্য ও সেবার মান গ্রাহকের কাছে তুলে ধরার মাধ্যমে,
- একই পণ্য বিভিন্ন স্থানে রেখে গ্রাহকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মাধ্যমে,
- সকল জায়গায় নিজস্ব পন্য ডেলিভারি করা এবং পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে,
- লিফলেট, বান্টিং, স্টিকার ব্যবহার করে পণ্যের বিজ্ঞাপন প্রচার করার মাধ্যমে,
- বিভিন্ন অকেশনে পন্যের উপর ডিসকাউন্ট প্রদান করার মাধ্যমে,
- অনলাইন মার্কেটিং অথবা বিজ্ঞাপন প্রদানের মাধ্যমে,
- আকর্ষণীয় পণ্যের মোড়ক তৈরি করার মাধ্যমে,
- সেলসের নতুন কৌশল আয়ত্ত করে ভবিষ্যতে সম্ভাব্য ক্রেতা তৈরি করার মাধ্যমে।
সেলস বৃদ্ধির কৌশল সমূহ
প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিয়ম কানুন যেহেতু ভিন্ন ধরনের তাই সেলস বৃদ্ধির কৌশল গুলোও ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। তবে বাজার প্রতিযোগিতার উপর ভিত্তি করে এবং গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী সেলস বৃদ্ধির নির্দিষ্ট কিছু কৌশল রয়েছে। নিচে সেলস বৃদ্ধির কৌশল সমূহ তুলে ধরা হলো:
পন্যের গুণগতমান বৃদ্ধি
ব্রান্ড যে দেশেরই হোক না কেন সে দেশে টিকে থাকার জন্য পণ্যের গুণগতমান অবশ্যই ভালো হওয়া জরুরি। গ্রাহক যখন তাদের গুণগত মান সমৃদ্ধ পণ্য হাতে পাবে তখন তারা খুব স্বাভাবিকভাবেই ওই ব্র্যান্ডের প্রতি আস্থাশীল হবে।
গ্রাহক সেবা উন্নয়ন
সেলস বৃদ্ধির অন্যতম কৌশল হলো গ্রাহক সেবার মান উন্নয়ন করা। অর্থাৎ গ্রাহক যদি আপনার উপর সন্তুষ্ট থাকে তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের পণ্য বারবার ক্রয় করবে এবং অন্যদেরকেও ক্রয় করতে উৎসাহিত করবে।
বাজার গবেষণা
সেলস বৃদ্ধির অন্যতম একটি কৌশল হলো বাজার গবেষণা করা। সঠিক বাজার গবেষণার মাধ্যমে গ্রাহকদের সন্তুষ্টি এবং গ্রাহকদের আগ্রহ সম্পর্কে খুব স্পষ্ট ধারণা লাভ করা যায়। গ্রাহকদের আগ্রহ সম্পর্কে ধারণা লাভ করার পর একটি প্রতিষ্ঠান খুব সহজেই তাদের পণ্য উৎপাদনের ছক তৈরি করতে পারে।
পরিকল্পিত সেলস প্রচারণা
কখনো কোন সেলস পরিকল্পনা সঠিক হতে পারে না যদি না সেখানে লক্ষ্যভিত্তিক সেলস প্রচারণা না করা হয়। সঠিকভাবে পরিকল্পনা করে লক্ষ্যভিত্তিক সেলস প্রচারণা নির্ধারণ করে নতুন গ্রাহকদের কাছে খুব দ্রুত পৌঁছানো সম্ভব।
ব্র্যান্ডিং এবং সুনাম
একটি প্রতিষ্ঠানের সেলস বৃদ্ধির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হল ব্র্যান্ডিং এবং সুনাম। ব্র্যান্ডিং এবং সুনাম ব্যবহার করে গ্রাহকরা প্রতিষ্ঠানের প্রতি নির্ভরশীল হয়ে পড়ে এবং ওই একই ব্র্যান্ড থেকে বারবার পণ্য কেনার জন্য আগ্রহী হয়।
সেলস টিমের প্রশিক্ষণ
প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় বৃদ্ধির জন্য সেলস টিমের প্রশিক্ষণ অত্যন্ত জরুরী। একটি দক্ষ সেলস টিম পন্যের বৈশিষ্ট্য এবং গ্রাহকের প্রয়োজন বিবেচনা করে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পন্য বিক্রয় করে থাকে।
📌 আরো পড়ুন 👇
সেলস সম্পর্কে আমাদের মতামত
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আজকে আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জন্য সেলস কি? সেলস কত প্রকার ও কি কি এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। যারা সেলফ সম্পর্কে একটি বিস্তারিত তথ্য জানতে আগ্রহী ছিলেন তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি গুরুত্বপূর্ণ হয়েছে বলে বিশ্বাস করি। আর্টিকেলটি ভালো লাগলে অবশ্যই সবার সাথে শেয়ার করুন এবং এরকম তথ্যবহুল আর্টিকেল পাওয়ার জন্য আমাদের ওয়েবসাইটের সাথেই থাকুন।