জিপিএস কি? জিপিএস কিভাবে কাজ করে

5/5 - (3 votes)

বর্তমান বিশ্বে, প্রযুক্তির বিকাশের সাথে সাথে আমরা এমন কিছু জিনিসের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি যা আমাদের জীবনকে সহজ করে তুলেছে। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভাবন হলো GPS বা Global Positioning System তবে এখন প্রশ্ন হলো, জিপিএস কী? এবং এটি কীভাবে কাজ করে? 

গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম বা জিপিএস হলো একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক রেডিও নেভিগেশন প্রযুক্তি, যা আমাদের মোবাইল ডিভাইস এবং অন্যান্য নেভিগেশন যন্ত্রের মাধ্যমে আমাদের অবস্থান নির্ধারণ করতে সহায়তা করে। যদিও এটি শুনতে সহজ বলে মনে হয়, প্রকৃতপক্ষে এর পিছনে জটিল গণিত এবং পদার্থবিদ্যার ব্যবহার রয়েছে, রয়েছে জানা না জানা অনেক তথ্যও। এই আর্টিকেলে, আমরা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো জিপিএস এর খুঁটিনাটি সবকিছু নিয়ে। 

Table of Contents

জিপিএস কি

জিপিএস কি. জিপিএস কিভাবে কাজ করে,

GPS (Global Positioning System) হলো একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নেভিগেশন ব্যবস্থা, যা পৃথিবীর যে কোনো স্থানের সঠিক ভৌগোলিক অবস্থান চিহ্নিত করতে পারে। এই সিস্টেমটি প্রথমে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের জন্য তৈরি করা হয়েছিল, তবে পরবর্তীতে এটি সাধারণ জনগণের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। GPS ব্যবহার করে আমরা আমাদের চারপাশের ভৌগোলিক অবস্থান ও লংগিচিউডসহ বিভিন্ন তথ্য পেতে পারি।

জিপিএস সিস্টেমের মূল ভিত্তি হলো “ট্রাইলেটারেশন” নামে একটি গাণিতিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে জ্যামিতির ব্যবহার করে বস্তুর আপেক্ষিক অবস্থান নির্ধারণ করা হয়। 

আরো স্পেসিফিক করে বলতে গেলে, পৃথিবীর কক্ষপথে ২৪টি স্যাটেলাইট রয়েছে। সেগুলো এমন ভাবে সেটাপ করা হয়েছে যা পুরো পৃথিবীর সবটুকু অংশ কভার করেছে সিগন্যাল দেয়ার মাধ্যমে। এক্ষেত্রে আপনি যেখানেই থাকেন না কেনো ৪টি স্যাটেলাইট আপনার সাথেই থাকবে সিগন্যালের মাধ্যমে আর এই সিস্টেম দ্বারা তৈরি করা হয়েছে জিপিএস নেটওয়ার্ক।

জিপিএর এর ইতিহাস

জিপিএস প্রযুক্তির মূল ধারণা স্পুটনিক স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রথম উদ্ভূত হয়েছিল। ১৯৫৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন স্পুটনিক-১ নামে প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে। যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা স্পুটনিকের রেডিও সংকেত বিশ্লেষণ করে জানতে পারেন যে উপগ্রহের অবস্থান নির্ধারণ করা সম্ভব। এই ধারণা থেকেই স্যাটেলাইট ভিত্তিক পজিশনিং সিস্টেমের প্রতি আগ্রহ জন্মায়।

১৯৬০-এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রথম সামরিক উপগ্রহ ভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম তৈরি করে, যা “ট্রানজিট” নামে পরিচিত ছিল। এটি মূলত মার্কিন নৌবাহিনীর সাবমেরিন গুলোকে নেভিগেট করতে সাহায্য করার জন্য তৈরি করা হয়েছিল। ট্রানজিট সিস্টেমে প্রায় ১০টি উপগ্রহ ছিল, যা দ্বারা প্রতি ঘন্টায় একবার করে পজিশনিং তথ্য পাওয়া যেত।

১৯৬৭ সালে, মার্কিন নৌবাহিনী “Timation” স্যাটেলাইট সিস্টেম চালু করে। এটি সময় পরিমাপের মাধ্যমে নির্ভুল স্থান নির্ধারণ করার একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করে, যা পরবর্তী সময়ে জিপিএসের মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।

১৯৭৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় একটি উন্নত নেভিগেশন সিস্টেম তৈরি করার জন্য কাজ শুরু করে, যা পরবর্তীতে জিপিএস নামে পরিচিত হয়। “NAVSTAR GPS” নামক এই প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল একটি গ্লোবাল সিস্টেম তৈরি করা, যা ২৪টি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নির্ভুল স্থান নির্ধারণ করতে সক্ষম হবে।

১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে, জিপিএস প্রযুক্তির সামরিক ব্যবহারের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। তবে ১৯৮৩ সালে দক্ষিণ কোরিয়ান এয়ারলাইন্সের ০০৭ ফ্লাইট সোভিয়েত ইউনিয়নের আকাশসীমায় ভুলবশত প্রবেশ করে বিধ্বস্ত হলে, যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান জিপিএস ব্যবস্থাকে বেসামরিক ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করার ঘোষণা দেন।

১৯৯৩ সালে, ২৪টি স্যাটেলাইটের পুরো নেটওয়ার্ক চালু হয়, যা পূর্ণাঙ্গ জিপিএস সিস্টেম হিসাবে কার্যকর হয়। ১৯৯০-এর দশকের শেষ দিকে বাণিজ্যিকভাবে জিপিএস ডিভাইস ব্যবহার শুরু হয়, এবং বিভিন্ন খাতে এর ব্যাপক ব্যবহার বৃদ্ধি পায়।

GPS সিস্টেমের মূল উপাদানসমূহ

GPS (Global Positioning System) সিস্টেমটি তিনটি প্রধান উপাদান নিয়ে গঠিত, যেগুলি একসঙ্গে কাজ করে সঠিক অবস্থান নির্ধারণ এবং নেভিগেশন সেবা প্রদান করে। এই উপাদানগুলো হলো:

১. স্পেস সেগমেন্ট (Space Segment)

স্পেস সেগমেন্টের মূল উপাদান হলো GPS স্যাটেলাইট। পৃথিবীর কক্ষপথে ২৪টি সক্রিয় GPS স্যাটেলাইট এবং কয়েকটি অতিরিক্ত স্যাটেলাইট থাকে। এগুলো প্রায় ২০,২০০ কিলোমিটার উচ্চতায় পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করে। প্রতিটি স্যাটেলাইট নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পৃথিবীর চারপাশে ২ বার ঘুরে এবং ক্রমাগত পজিশনিং তথ্য রেডিও সিগন্যালের মাধ্যমে পৃথিবীতে পাঠায়।

২. কন্ট্রোল সেগমেন্ট (Control Segment)

কন্ট্রোল সেগমেন্ট হলো GPS সিস্টেমের পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এটি পৃথিবীতে অবস্থিত বিভিন্ন ট্র্যাকিং স্টেশন এবং মেইন কন্ট্রোল স্টেশন নিয়ে গঠিত।

৩. ইউজার সেগমেন্ট (User Segment)

ইউজার সেগমেন্ট হলো GPS ব্যবহারকারীদের অংশ। এটি মূলত GPS রিসিভার এবং ডিভাইসগুলোর মাধ্যমে কাজ করে। GPS রিসিভারগুলো স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত সিগন্যাল গ্রহণ করে এবং সেই সিগন্যাল ব্যবহার করে নিজের অবস্থান নির্ধারণ করে। রিসিভারগুলি স্যাটেলাইট থেকে তিনটি বা তার বেশি সিগন্যাল গ্রহণ করে তাদের অবস্থান, গতি, এবং সময় নির্ধারণ করতে পারে।

জিপিএস কিভাবে কাজ করে

জিপিএস কি. জিপিএস কিভাবে কাজ করে,

GPS মূলত স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কাজ করে। পৃথিবীর চারপাশে মোট ২৪টি GPS স্যাটেলাইট স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি স্যাটেলাইট পৃথিবীর প্রায় ১২,০০০ কিলোমিটার উপরে অবস্থান করে। প্রতিটি স্যাটেলাইটে একটি নির্দিষ্ট সময় এবং স্থান সম্পর্কিত তথ্য থাকে। 

GPS ডিভাইসগুলো এই স্যাটেলাইটগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তিনটি বা চারটি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে নির্দিষ্ট স্থানের ভৌগোলিক অবস্থান নির্ণয় করে। তবে শুধু এটুকু কথাতে জিপিএস কিভাবে কাজ করে তা সম্পূর্ণ ভাবে বোঝা সম্ভব নয়। তাই একদম বিস্তারিত ভাবে বিষয়টি উপস্থাপন করছি। 

প্রথমত্ব, GPS সিস্টেমের স্পেস সেগমেন্টে থাকা স্যাটেলাইটগুলো ক্রমাগত পৃথিবীতে রেডিও সংকেত পাঠায়। প্রতিটি স্যাটেলাইট তার নিজস্ব অবস্থান এবং সঠিক সময়ের তথ্য প্রদান করে। এই স্যাটেলাইট গুলো একটি নির্দিষ্ট সময়ে পৃথিবীর প্রতিটি অংশকে কভার করে, তাই যেকোনো স্থান থেকে রিসিভার একই সময়ে অন্তত ৪টি স্যাটেলাইটের সিগন্যাল পেয়ে থাকে।

এরপর GPS রিসিভারটি স্যাটেলাইট থেকে পাঠানো সংকেতগুলো গ্রহণ করে এবং ট্রায়াংগুলেশন পদ্ধতি ব্যবহার করে তার নিজের অবস্থান নির্ধারণ করে। এই প্রসেসটি ৩টি বা তার বেশি স্যাটেলাইটের দূরত্ব পরিমাপ করে কাজ করে। এক্ষেত্রে প্রতিটি স্যাটেলাইট থেকে রিসিভার পর্যন্ত সময় এবং দূরত্ব পরিমাপ করা হয়।

স্যাটেলাইট থেকে রেডিও সংকেতের মাধ্যমে যে সময় পাঠানো হয় এবং যে সময় রিসিভার সেই সংকেত গ্রহণ করে, তার মধ্যে পার্থক্য থেকে সংকেতের গতি নির্ধারণ করা হয়। এই সময়ের পার্থক্যের ভিত্তিতে স্যাটেলাইট এবং রিসিভারের মধ্যে দূরত্ব পরিমাপ করা হয়।

ট্রায়াংগুলেশন এবং সময় গণনা সম্পন্ন হওয়ার পর, GPS রিসিভার সঠিকভাবে রিসিভারের অবস্থান এবং উচ্চতা নির্ধারণ করতে পারে। GPS রিসিভার এই প্রাপ্ত তথ্যকে প্রক্রিয়াকরণ করে ইউজারদের জন্য নেভিগেশন ডেটা প্রদর্শন করে। এই ডেটা থেকেই রিসিভারের সঠিক অবস্থান, গতি, উচ্চতা, এবং চলাচলের দিক নির্ধারণ করে। 

এভাবেই জিপিএস কাজ করে অবস্থান নির্ণয়ের ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে আরো একটি তথ্য দিয়ে রাখা ভালো যে, যখন মাত্র দুইটি স্যাটেলাইটের তথ্য ব্যবহার করে অবস্থান নির্ধারণ করা হয়, তখন এটিকে ২D পজিশনিং বলে। আর যখন তিনটি বা তার বেশি স্যাটেলাইটের তথ্য ব্যবহার করে অবস্থান নির্ধারণ করা হলে, এটিকে ৩D পজিশনিং বলে।

জিপিএস কী কী কাজে ব্যবহার করা হয়

১) নেভিগেশন ও ম্যাপিং

GPS-এর মূল এবং সবচেয়ে প্রচলিত ব্যবহার হলো নেভিগেশন। এটি ব্যবহার করে যেকোনো যানবাহন, ব্যক্তি বা ডিভাইস তাদের বর্তমান অবস্থান জানতে পারে এবং গন্তব্যে পৌঁছানোর পথ নির্দেশ পায়। যেমন: 

  • ড্রাইভাররা ম্যাপের মাধ্যমে সঠিক রাস্তায় গাড়ি চালাতে পারে।
  • যাত্রীবাহী বিমান, ট্রেন, এবং অন্যান্য যানবাহন চলার সঠিক দিক নির্ধারণ করে।
  • যেসব এলাকায় রাস্তা সমতল নয়, সেখানেও GPS দিয়ে পথচলা সহজ হয়।

২) স্মার্টফোন এবং মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন

বেশিরভাগ স্মার্টফোনে GPS থাকে, যা বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনে ব্যবহার করা হয়। যেমন:

  • গুগল ম্যাপস বা অন্যান্য ম্যাপ অ্যাপে লোকেশন শেয়ার করা।
  • ফুড ডেলিভারি এবং রাইড শেয়ারিং অ্যাপ গ্রাহকের অবস্থান নির্ধারণ করে। 
  • সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম GPS-এর সাহায্যে জিওট্যাগ ব্যবহার করে।

৩) স্থান নির্ধারণ ও জরিপ

স্থাপনার জন্য ভূমিকৌশলীদের জিপিএস প্রযুক্তি কাজে লাগে। স্থপতি ও প্রকৌশলীরা সঠিকভাবে জমির অবস্থান, সীমানা, এবং উচ্চতা পরিমাপ করতে GPS ব্যবহার করে।

৪) যানবাহন ও ফ্লিট ট্র্যাকিং

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থা জিপিএস ব্যবহার করে তাদের যানবাহন বা পরিবহন ব্যবস্থার উপর নজর রাখে।

৫) জরুরি সেবা এবং উদ্ধার অভিযান

জিপিএস প্রযুক্তি জরুরি সেবা প্রদানকারী সংস্থা যেমন পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং অ্যাম্বুলেন্সে ব্যবহৃত হয়। যাতে করে তারা দ্রুত সঠিক অবস্থানে পৌঁছাতে পারে।

৬) বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ

বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণা যেমন ভূমিকম্প পর্যবেক্ষণ, সমুদ্রের স্তর পরিবর্তন, এবং আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহে জিপিএস ব্যবহার হয়। 

৭) প্রতিরক্ষা এবং সামরিক খাতে ব্যবহার

প্রতিরক্ষা এবং সামরিক খাতে GPS অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন: মিসাইল গাইডেন্স এবং সামরিক বাহিনীর লোকেশন ট্র্যাকিং এর মত কাজে।  

৮) পর্যটন শিল্পে জিপিএস ব্যবহার

পর্যটন শিল্পে জিপিএস ব্যবহারকরে সঠিকভাবে বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানের তথ্য পাওয়া যায় এবং পর্যটকদের রুট নির্দেশনা দেওয়া হয়।

৯) ট্র্যাকিং ডিভাইসের ব্যবহার

তাছাড়া বিভিন্ন ব্যক্তিগত ট্র্যাকিং ডিভাইসের মাধ্যমে বাচ্চাদের অবস্থান নির্ধারণ, বয়স্কদের নজরদারি, এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে GPS ব্যবহৃত হয়।

জিপিএস বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে

জিপিএস আমাদের প্রতিদিনের বিভিন্ন কাজে অপরিহার্য হয়ে উঠেছে, যেমন: ন্যাভিগেশন, ট্র্যাকিং, যোগাযোগ, সামরিক এবং বিজ্ঞান গবেষণার ক্ষেত্র ইত্যাদি। এটা খুব সুন্দর একটা চিন্তা যে, যদি হঠাৎ করেই GPS বন্ধ হয়ে যায় তাহলে কি হবে? আসুন কিছু লজিক্যাল ও অথেনটিক সমস্যা গুলো জেনে আসি। 

যোগাযোগ এবং ন্যাভিগেশনে বিশৃঙ্খলা

জিপিএস বন্ধ হয়ে গেলে, প্রথমত যে ক্ষেত্রটি সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে তা হলো যোগাযোগ এবং ন্যাভিগেশন। অনেক ধরনের ন্যাভিগেশন ডিভাইস এবং অ্যাপ্লিকেশন, যেমন: গুগল ম্যাপস, উবার, বা ফ্লাইট ট্র্যাকিং সিস্টেম জিপিএসের ওপর নির্ভরশীল। ফলে, যানবাহনের সঠিক পথ নির্দেশনা দেওয়া এবং অবস্থান নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

সামরিক কার্যক্রমের সমস্যা

বেশিরভাগ সামরিক ড্রোন, মিসাইল এবং ন্যাভিগেশন সিস্টেম জিপিএসের মাধ্যমে কাজ করে। সুতরাং, যদি জিপিএস বন্ধ হয়ে যায়, সামরিক বাহিনীর জন্য এটি এক বড় সমস্যার কারণ হবে।  

বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বাধা

জিপিএস সিস্টেম বিজ্ঞানীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপকরণ। উদাহরণস্বরূপ, ভূমিকম্পের পূর্বাভাস, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, এবং মহাকাশ গবেষণায় সঠিক স্থান এবং সময় নির্ধারণে জিপিএসের ওপর নির্ভর করা হয়। তাই, জিপিএস বন্ধ হয়ে গেলে বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটবে।

পরিবহন ব্যবস্থার উপর প্রভাব

বিমান চলাচল বা জাহাজ পরিচালনা সঠিকভাবে করার জন্য জিপিএস অপরিহার্য। জিপিএস সিস্টেম ব্যর্থ হলে বা বন্ধ হয়ে গেলে, বিমানবন্দর এবং জাহাজ ঘাঁটি থেকে নিরাপদে চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়বে।

📌 আরো পড়ুন 👇

 

জিপিএস সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নউত্তর

জিপিএস এর মালিক কে?

GPS মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা বিভাগের মালিকানাধীন রয়েছে এবং এটি পরিচালন করাও হয় সেখান থেকেই। 

জিপিএস কি ইন্টারনেট ছাড়া চলে?

জিপিএস মূলত স্যাটেলাইট সিগন্যালের মাধ্যমে কাজ করে এবং ইন্টারনেটের সাহায্য ছাড়াও আপনার অবস্থান নির্ধারণ করতে সক্ষম।

জিপিএস সম্পর্কে আমাদের মতামত

পুরো আর্টিকেলটি দ্বারা আমরা জানতে পারলাম জিপিএস কি, জিপিএস এর ইতিহাস, এটা কিভাবে কাজ করে এবং কোন কোন কাজে ব্যবহৃত হয়। আমরা আরো জেনেছি যদি কোনো কারণে GPS সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায় তবে পৃথিবীতে কি কি প্রভাব পড়তে পারে। আশা করছি উক্ত আর্টিকেলটি আপনার জন্য বেশ হেল্পফুল হয়েছে, এমনই সব ইন্টারেস্টিং তথ্যবহুল আর্টিকেলের জন্য আমাদের ওয়েবসাইটটি অনুসরণ করুন, ধন্যবাদ। 

Sharing Is Caring

Leave a Comment